ঢাকা , শুক্রবার, ১৪ মার্চ ২০২৫ , ৩০ ফাল্গুন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
সরকার সংস্কার কমিশন করলেও নদীর ক্ষেত্রে প্রতিফলন নেই-আনু মুহাম্মদ বাড্ডায় কিশোর গ্যাংয়ের সংঘর্ষে নিহত ১ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিপুল খরচেও কমানো যাচ্ছে না নানামুখী আতঙ্ক রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা সেই শিশু আছিয়া না ফেরার দেশে ধর্ষণে আতঙ্ক -উদ্বেগ ভারতকে অযাচিত বিভ্রান্তিকর মন্তব্যের পুনরাবৃত্তি রোধ করতে বলল ঢাকা প্রধান উপদেষ্টা চীন সফরে যাচ্ছেন ২৬ মার্চ সালমান এফ রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা খরায় পুড়ছে চা-বাগান উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা ইফতারিতে দই-চিড়ার জাদু একরাতে দু’জনকে কুপিয়ে হত্যা এলাকায় আতঙ্ক স্বাভাবিক নিত্যপণ্যের বাজার, সংকট সয়াবিনে মামলা থেকে স্বামীর নাম বাদ দেয়ার কথা বলে স্ত্রীকে ধর্ষণ ছেঁউড়িয়ায় শুরু লালন স্মরণোৎসব দোহাজারীতে বাসচাপায় ৩ জন নিহত হেনস্তার পর ছাত্রীকে ফেলে দিলো দুর্বৃত্তরা ৫৬০ মডেল মসজিদ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম ভ্যাট দেয় না বেশিরভাগ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরনের কাপড় টিভি ফ্রিজ খাট টাকা সব পুড়ে শেষ বস্তিতে আগুন
মিয়ানমারে ভয়াবহ আর্থিক সংকট

কিডনি বিক্রি করছে সাধারণ মানুষ

  • আপলোড সময় : ২৮-০২-২০২৫ ০৭:২৪:২৬ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০২-২০২৫ ০৭:২৪:২৬ অপরাহ্ন
কিডনি বিক্রি করছে সাধারণ মানুষ
দারিদ্র্যের ফাঁদে পড়ে নিজেদের কিডনি বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন মিয়ানমারে অনেক মানুষ। সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির অর্থনীতি ভেঙে পড়ায়, জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে এই পথ বেছে নিচ্ছেন অনেকে। সম্প্রতি মিয়ানমারের একাধিক নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে গিয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি।
২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে অর্থনৈতিক সংকট তীব্র হয়েছে। কাজ হারিয়ে, ঋণের চাপে পড়ে বেঁচে থাকার লড়াই করছে দেশটির সাধারণ মানুষ। বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, মানুষের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে সক্রিয় হয়েছে একদল দালাল, যারা বিপদে পড়া মানুষকে বিদেশে নিয়ে গিয়ে কিডনি বিক্রি করতে উদ্বুদ্ধ করছে। বিবিসির এক প্রতিবেদনে অবৈধভাবে কিডনি বিক্রির চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ২০২১ সালে দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। সবকিছুর দাম এখন হাতের নাগালের বাইরে। মিয়ানমারের এক নাগরিক জেয়া জানিয়েছেন, জিনিসপত্রের দাম এত বেশি যে, তিনি তার পরিবারের সদস্যদের মুখে খাবার তুলে দিতে পারছেন না। তাকে ঋণ করে পরিবারের খরচ মেটাতে হচ্ছে। জেয়ার পুরো পরিবার তার শাশুড়ির বাড়িতে থাকতেন। এটি একটি প্রত্যন্ত গ্রাম। প্রধান শহর ইয়াঙ্গুন থেকে ওই গ্রামে যেতে কয়েক ঘণ্টা লাগে। খড়ের ছাউনি দেওয়া ছোট ঘরে থাকেন তারা। গ্রামের রাস্তা এখনও কাঁচা।জেয়া জানতে পারেন যে, তার আশপাশে কয়েকজন কিডনি বিক্রি করেছেন। তাদের দেখে তার কাছে সুস্থই মনে হয়েছিল বলে জানান তিনি। এরপরেই তিনি নিজেও কিডনি বিক্রির উপায় খুঁজতে শুরু করেন। জেয়া জানান, তিনিসহ ৮ জন ভারতে গিয়ে কিডনি বিক্রি করেছেন। এশিয়াজুড়েই বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিক্রি করা অবৈধ। মিয়ানমার এবং ভারতেও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কেনাবেচা বেআইনি। জেয়া জানান, তিনি অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এক ব্যক্তির সন্ধান পান, যাকে তিনি এই কাজের ‘দালাল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ওই ব্যক্তি জেয়ার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করেন এবং কয়েক সপ্তাহ পর জানান, একজন সম্ভাব্য গ্রহীতা পাওয়া গেছে যিনি একজন বার্মিজ নারী। এরপর অস্ত্রোপচারের জন্য তাদের ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়। ভারতে দাতা ও গ্রহীতা নিকটাত্মীয় না হলে প্রমাণ করতে হয় যে, মানবিক উদ্দেশ্যেই অঙ্গ দান করা হয়েছে। এসব নিয়ম এড়াতে দালাল একটি ভুয়া নথি তৈরি করেন। দালাল গ্রহীতার পারিবারিক নথিতে জেয়ার নাম ঢুকিয়ে দেন। এরপর দালাল তাকে গ্রহীতার সঙ্গে দেখা করানোর জন্য ইয়াঙ্গুনে নিয়ে যান। সেখানে এক ব্যক্তি নিজেকে চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়েছিলেন। তিনি সতর্ক করেছিলেন যে, জেয়া যদি শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন, তাহলে তাকে বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে।
জেয়াকে জানানো হয়েছিল, অস্ত্রোপচারের বিনিময়ে তিনি ৭৫ লাখ মিয়ানমার কিয়াত (প্রায় ১৭০০ থেকে ২৭০০ মার্কিন ডলার) পাবেন। এরপর তিনি উত্তর ভারতে যান। সেখানে একটি বড় হাসপাতালে এই অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। জেয়া জানান, অস্ত্রোপচারের আগে কর্তৃপক্ষ তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল যে তিনি স্বেচ্ছায় কিডনি দান করছেন কি না বা তাকে কোনও জোরজবরদস্তি করা হয়েছে কি না। তিনি তাদের জানান, গ্রহীতা তার আত্মীয়। জেয়া জানিয়েছেন, অস্ত্রোপচারের পর তার বড় কোনো সমস্যা হয়নি, তবে প্রচণ্ড ব্যথার কারণে তিনি সহজে নড়াচড়া করতে পারছিলেন না। এরপর এক সপ্তাহ তিনি হাসপাতালে কাটিয়েছিলেন। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে বেকারত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে। যুদ্ধ পরিস্থিতি দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি ভারতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রায় ১০ জনকে কিডনি কিনতে বা বিক্রি করতে সহায়তা করেছেন। তিনি জানান, মধ্য মিয়ানমারের মান্দালয়ে একটি ‘এজেন্সি’র কাছে দাতাদের রেফার করতেন। তার ভাষায়, দাতাদের নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আমাদের কাছে এমন দাতাদের তালিকা রয়েছে, যারা কিডনি দানের জন্য প্রস্তুত। তিনি আরও জানান, দাতা ও গ্রহীতার মধ্যে সম্পর্ক দেখানোর জন্য নথিপত্র জাল করা হতো যেখানে অপরিচিত ব্যক্তিদের বিবাহসূত্রে আত্মীয় হিসেবে উপস্থাপন করা হত। তবে তিনি এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কোনো আর্থিক সুবিধা পেয়েছেন কি না, সে প্রশ্নের উত্তর দেননি।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স